ফুলকপি খাওয়ার উপকারিতা কি?

মলদ্বারের প্রদাহ উপশম করে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে কোলনের প্রদাহ দূর করতে পারে ফুলকপি। এতে ফেনিলিসোডিওসায়ানাইট নামক একটি উপাদান রয়েছে, যা ক্ষতিগ্রস্থ কোলোনিক কোষগুলিকে মেরামত করে।

মাতৃত্বের জন্য উপকারী ফুলকপি মায়ের জন্যও খুব উপকারী। এই সবজি গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত অত্যাবশ্যকীয় ফাইবার এবং খনিজ উপাদান মায়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে শীতকালে ফুলকপি নিয়মিত খাওয়া উচিত। এই সবজি পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এই দুটি পুষ্টি উপাদান ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এতে উপস্থিত পটাশিয়াম রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন বি৬ ব্লাড সুগার ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে।

মস্তিষ্ক ও কোষের জন্য উপকারী ফুলকপিতে ফসফরাস ও কোলিন থাকে। এই দুটি উপাদানই শরীরের কোষ গঠনে খুবই কার্যকরী। ফুলকপি আমাদের মস্তিষ্কের কোষকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। শীতের এই সবজি মস্তিষ্কের রোগ ও হৃদরোগ কমাতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের জন্য ফুলকপির উপকারি ফুলকপিতে উপস্থিত ভিটামিন-সি কোলাজেনের উৎপাদন উন্নত করতে পারে। কোলাজেনকে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা ত্বকে ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য প্রদান করতে পারে। শুধু এটিই নয়, এটি বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ত্বকের সমস্যা (শুষ্কতা, শিথিলতা এবং বলিরেখা) এর প্রভাবও কমাতে পারে । ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করলে চুল পড়াও কমে যায় । এর ভিত্তিতে বলা যায় বাঁধাকপি খাওয়া ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় উপকারী হতে পারে।

টক্সিন অপসারণ করুন ক্রুসিফেরাস সবজিতে রয়েছে গ্লুকোসিনোলেটস নামক সেকেন্ডারি মেটাবোলাইট (এক ধরনের ছোট অণু)। এগুলো গ্লুকোসিনোলেট, এনজাইম বাড়ায় যা লিভার থেকে টক্সিন দূর করে। এটি লিভারকে ডিটক্স করতে এবং শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ করতে সাহায্য করতে পারে।

রক্ত ​​প্রবাহ উন্নত করতে পারে ফুলকপি একটি গবেষণায় দেখা গেছে ফুলকপিতে কিছু পরিমাণ নাইট্রাইট পাওয়া যায়। নাইট্রাইট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, হৃৎপিণ্ডকে সঠিকভাবে কাজ করতে দেয় এবং ধমনীতে রক্ত ​​প্রবাহও ঠিক থাকে।

চোখের জন্য ফুলকপির উপকারিতা ভিটামিন-সি চোখের রক্তনালীর জন্য ভালো। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে, এটি ছানি পাওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে। 100 গ্রাম ফুলকপিতে এর পরিমাণ 48.2 মিলিগ্রাম। ভিটামিন-সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো কাজ করে, যা চোখকে বার্ধক্যজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন অনেক মানুষ কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তিত, কারণ রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। একই সঙ্গে ফুলকপি খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে যে বাঁধাকপিতে হাইপোকোলেস্টেরোলিক (কোলেস্টেরল-হ্রাসকারী) প্রভাব রয়েছে। অতএব, খাবারে ফুলকপি ব্যবহার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ফুলকপি কোলিনের একটি ভালো উৎস এবং কোলিন মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতএব, ফুলকপি খাওয়ার সুবিধার মধ্যে রয়েছে স্মৃতিশক্তি, মেজাজ, পেশী নিয়ন্ত্রণ, মস্তিষ্কের বিকাশ এবং নিউরোট্রান্সমিটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ। এই সব একটি সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয়।

ওজন কমাতে কার্যকর ফুলকপি ফাইবারে সমৃদ্ধ এবং এতে কম গ্লাইসেমিক লোড (জিএল) রয়েছে। ফুলকপি গ্লুকোজ, ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া এবং শরীরের চর্বি জমে এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।

হাড় মজবুত করে ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন-কে, যা হাড়কে মজবুত করতে পারে। এছাড়াও, এতে এমন অনেক বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ রয়েছে, যা হাড়ের ঘনত্ব উন্নত করে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমাতে পারে। একটি চিকিৎসা গবেষণা বলছে যে ভিটামিন-কে প্রতিদিন গ্রহণ করলে হাড় ভাঙার ঝুঁকি কম থাকে। অতএব, ফুলকপির উপকারিতার মধ্যে রয়েছে হাড়কে শক্তিশালী করা।

অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে , যা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ফুলকপি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি দুর্দান্ত উৎস, যা আপনার কোষগুলিকে ক্ষতিকারক মুক্ত মৌলিক এবং প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। ফুলকপির বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। ফুলকপিতে কোলিনের পরিমাণ বেশি , একটি অপরিহার্য পুষ্টি যা অনেকের অভাব রয়েছে। ফুলকপিতে রয়েছে সালফোরাফেন, ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফুলকপি অবিশ্বাস্যভাবে বহুমুখী এবং এটি আপনার খাদ্যে শস্য এবং শাক প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধু ফুলকপি বহুমুখী নয়, এটি আপনার ডায়েটে যোগ করাও খুব সহজ।