পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?

পাবলিশঃ 3 years ago
দেখেছেনঃ 2888

পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?

পাতলা পায়খানা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, পরজীবী, খাদ্যে বিষক্রিয়া, অন্ত্রের রোগ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। পাতলা পায়খানার ফলে পাকস্থলীর রস ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। এছাড়াও, পাতলা পায়খানার ফলে শরীর থেকে পানি ও ইলেকট্রোলাইটস বেরিয়ে যায়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

গরুর মাংস একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এতে প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, এবং ভিটামিন বি12 রয়েছে। প্রোটিন হজম করতে শরীরের প্রচুর পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইটস প্রয়োজন। তাই পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়ার ফলে হজম প্রক্রিয়া আরও জটিল হতে পারে। গরুর মাংসে চর্বিও বেশি থাকে। গরুর মাংসে থাকা চর্বি ও কোলেস্টেরল পাকস্থলীর সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।  তবে  পাতলা পায়খানার সময় চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এড়ানো উচিত। কারণ চর্বি হজম হতে বেশি সময় লাগে, ফলে পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

তাই পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। পাতলা পায়খানা ভালো না হওয়া পর্যন্ত হালকা ও সহজে হজমযোগ্য খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইটস পান করা উচিত।

পাতলা পায়খানা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন:

  • খাদ্যে বিষক্রিয়া: খাবার নষ্ট হয়ে গেলে বা জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত হলে খাদ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে পাতলা পায়খানা ছাড়াও বমি, পেট ব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • ভাইরাসজনিত সংক্রমণ: ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যেমন ডায়রিয়া ভাইরাস, নোরোভাইরাস, রোটাভাইরাস ইত্যাদির কারণেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে পাতলা পায়খানা ছাড়াও বমি, পেট ব্যথা, মাথাব্যথা, জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেমন সালমোনেলা, শিগেলা, ইত্যাদির কারণেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে পাতলা পায়খানা ছাড়াও বমি, পেট ব্যথা, পেটে গ্যাস, জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • পরজীবী সংক্রমণ: পরজীবী সংক্রমণ, যেমন অ্যামিবা, জিয়ার্ডিয়া, ইত্যাদির কারণেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। পরজীবী সংক্রমণের কারণে পাতলা পায়খানা ছাড়াও বমি, পেট ব্যথা, পেটে গ্যাস, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • অন্ত্রের রোগ: অন্ত্রের রোগ, যেমন আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রোহন'স ডিজিজ, ইত্যাদির কারণেও পাতলা পায়খানা হতে পারে। অন্ত্রের রোগের কারণে পাতলা পায়খানা ছাড়াও পেটে ব্যথা, পেটে গ্যাস, রক্তযুক্ত মল, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পাতলা পায়খানা হতে পারে। যেমন, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিহিস্টামিন, ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ইত্যাদি।

পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইট বেরিয়ে যায়। এতে শরীরে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলো হলো:

  • তৃষ্ণার্ত থাকা
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া
  • মাথা ঘোরা
  • দুর্বলতা

পাতলা পায়খানা হলে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইট গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়াও, পাতলা পায়খানার কারণ নির্ণয় করে তার চিকিৎসা করাও জরুরি।

গরুর মাংস একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে লোহা, জিংক, সেলেনিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তবে, পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া উচিত নয়। কারণ, গরুর মাংস হজমে বেশ কঠিন। এতে প্রচুর পরিমাণে চর্বিও থাকে। পাতলা পায়খানার সময় পাকস্থলী ও অন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এতে গরুর মাংস হজমে সমস্যা হতে পারে। ফলে পাতলা পায়খানা আরও বেড়ে যেতে পারে।

তাই, পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। পাতলা পায়খানা ভালো না হওয়া পর্যন্ত হালকা ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত। যেমন:

  • ভাত
  • রুটি
  • মাছ
  • মুরগির মাংস
  • ডিম
  • সবজি
  • ফল

এছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইট গ্রহণ করা উচিত। যেমন:

  • ORS
  • ডাবের পানি
  • লেবুর পানি
  • ডাবের শাঁস

পরিশেষ

পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া এড়ানোই ভালো। তবে যদি গরুর মাংস খেতে ইচ্ছা হয়, তাহলে চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া গরুর মাংস ঝলসে বা গ্রিল করে খেলে চর্বির পরিমাণ কমে যায়। পাতলা পায়খানা যদি ২-৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?

আপনার যদি ডায়রিয়া হয়, তাহলে গরুর মাংস বা অন্য কোনো ভারী এবং হজম করা কঠিন খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি কারণ ডায়রিয়ার সময়, আপনার পাচনতন্ত্র ইতিমধ্যেই সংবেদনশীল এবং কিছু খাবার ভেঙে ফেলতে সমস্যা হতে পারে, যার ফলে আরও অস্বস্তি হতে পারে।


হালকা, সহজে হজমযোগ্য খাবার যেমন সাধারণ ভাত, সেদ্ধ শাকসবজি এবং কলাগুলিতে লেগে থাকা ভাল, কারণ এগুলি পাচনতন্ত্রের উপর মৃদু থাকার পাশাপাশি শক্তি এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে সহায়তা করতে পারে। প্রচুর জল এবং ঝোল বা চা এর মতো পরিষ্কার তরল পান করে হাইড্রেটেড থাকাও গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার যদি ক্রমাগত ডায়রিয়া বা অন্যান্য সম্পর্কিত লক্ষণ থাকে তবে আরও মূল্যায়ন এবং চিকিত্সার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?

পাতলা পায়খানা হলে স্বল্প পরিমান গরুর মাংস খাওয়া জেতে পারে। তবে না খাওয়াই উত্তম কারন এতে প্রচুর পরিমাণে তেল চর্বি রয়েছে। অতিরিক্ত তেল চর্বি খেলে পাতলা পায়খানা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস না খাওয়াই ভাল।

পাতলা পায়খানা সম্পর্কিত অন্যান্য প্রশ্ন সমূহ

পাতলা পায়খানা হলে মাছ খাওয়া যাবে কি?
পাতলা পায়খানা হলে কি ডিম খাওয়া যাবে?
পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?
ডায়রিয়া এবং পাতলা পায়খানার মধ্যে পার্থক্য কি?
পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি
পাতলা পায়খানা হলে কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না?
গর্ভবতী মায়ের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়
পাতলা পায়খানা হলে কি খেতে হবে?
পাতলা পায়খানা হলে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত নয়?
পাতলা পায়খানা ও বমি হলে করণীয় কি?
ঘরে খাবার স্যালাইন তৈরি করবো কিভাবে?