মিলাদুন্নবী শব্দটি দুটি আরবি শব্দের সমষ্টি: মিলাদ (ميلاد) এবং নবী (نبي)। মিলাদ শব্দের অর্থ জন্ম, জন্মদিন, জন্মকাল ইত্যাদি। নবী শব্দের অর্থ বার্তাবাহক, প্রেরিত ব্যক্তি ইত্যাদি।
মিলাদুন্নবী শব্দের সম্মিলিত অর্থ হলো "নবীর জন্ম"। অর্থাৎ, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মদিন।
মিলাদুন্নবী উৎসব
মিলাদুন্নবী উৎসব মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবটি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মদিন উপলক্ষে পালিত হয়।
মিলাদুন্নবী উৎসব সাধারণত রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে পালিত হয়। এই দিনে মুসলমানরা মসজিদে গিয়ে নবীজির জীবনী আলোচনা করেন, দরুদ ও সালাম পাঠ করেন, দোয়া ও মোনাজাত করেন।
মিলাদুন্নবী উৎসবের দিন অনেক দেশে ছুটি থাকে। এই দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেমন, মিলাদ মাহফিল, কুরআন তিলাওয়াত, মিলাদ ক্বাওয়ালি, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি।
মিলাদুন্নবী পালনের তাৎপর্য
মিলাদুন্নবী পালনের তাৎপর্য হলো:
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা।
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও আদর্শের কথা স্মরণ করা।
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করার প্রেরণা লাভ করা।
মিলাদুন্নবী উৎসব পালনের মাধ্যমে মুসলমানরা হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি তাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। তারা হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও আদর্শের কথা স্মরণ করেন এবং তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করার প্রেরণা লাভ করেন।
মিলাদুন্নবী শব্দটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে। মিলাদুন্নবী শব্দের অর্থ হলো "নবীর জন্ম"। এই শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। প্রথম শব্দটি হলো "মিলাদ" যার অর্থ হলো "জন্ম"। দ্বিতীয় শব্দটি হলো "নবী" যার অর্থ হলো "প্রেরিত"। সুতরাং, মিলাদুন্নবী শব্দের অর্থ হলো "প্রেরিতের জন্ম"।
মিলাদুন্নবী হলো নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জন্মকালীন ঘটনাবলীকে স্মরণ করে যে অনুষ্ঠান করা হয়। এই অনুষ্ঠানটি সাধারণত আরবি মাস রবিউল আওয়াল ১২ তারিখে পালিত হয়।
মিলাদুন্নবী পালনের উদ্দেশ্য হলো নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, এই অনুষ্ঠানে মিলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, দরুদ ও সালাম পাঠ করা হয় এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্য দোয়া করা হয়।
মিলাদুন্নবী পালন নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। যারা এই অনুষ্ঠানকে বিদাত বলে মনে করেন, তারা বলেন যে, নবী মুহাম্মদ (সা.) বা তাঁর সাহাবাগণ কখনো এই অনুষ্ঠান পালন করেননি। কুরআন ও হাদীসেও এই অনুষ্ঠানের কোনো উল্লেখ নেই। তাই এটি একটি নতুন বিষয় (বিদাত) যা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
যারা এই অনুষ্ঠানকে বিদাত মনে করেন না, তারা বলেন যে, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জন্মকালীন ঘটনাবলী স্মরণ করা একটি মহৎ কাজ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। তাই এটি একটি সুন্নত কাজ।
বিদাত বলতে নতুন করে কিছু প্রবর্তন করাকে বোঝায়। যদি কোনো নতুন বিষয় ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে তা বিদাত হবে। কিন্তু যদি কোনো নতুন বিষয় ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত:
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের মাধ্যমে যদি ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের মাধ্যমে যদি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
সুতরাং, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন বিদাত কিনা তা নির্ভর করে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কী করা হয় তার উপর। যদি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে। কিন্তু যদি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
‘মিলাদুন্নবী’ শব্দটি যৌগিক শব্দ। যা দুইটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। যেমনঃ মিলাদ + নবী = মিলাদুন্নবী
অর্থাৎ মিলাদুন্নবী শব্দ দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ের জন্মদিন বুজানো হয়ে থাকে।