ঈদে মিলাদুন্নবী হলো নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জন্মকালীন ঘটনাবলীকে স্মরণ করে যে অনুষ্ঠান করা হয়। এই অনুষ্ঠানটি সাধারণত আরবি মাস রবিউল আওয়াল ১২ তারিখে পালিত হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের উদ্দেশ্য হলো নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, এই অনুষ্ঠানে মিলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, দরুদ ও সালাম পাঠ করা হয় এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্য দোয়া করা হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। যারা এই অনুষ্ঠানকে বিদাত বলে মনে করেন, তারা বলেন যে, নবী মুহাম্মদ (সা.) বা তাঁর সাহাবাগণ কখনো এই অনুষ্ঠান পালন করেননি। কুরআন ও হাদীসেও এই অনুষ্ঠানের কোনো উল্লেখ নেই। তাই এটি একটি নতুন বিষয় (বিদাত) যা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
যারা এই অনুষ্ঠানকে বিদাত মনে করেন না, তারা বলেন যে, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জন্মকালীন ঘটনাবলী স্মরণ করা একটি মহৎ কাজ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। তাই এটি একটি সুন্নত কাজ।
বিদাত বলতে নতুন করে কিছু প্রবর্তন করাকে বোঝায়। যদি কোনো নতুন বিষয় ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে তা বিদাত হবে। কিন্তু যদি কোনো নতুন বিষয় ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত:
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের মাধ্যমে যদি ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের মাধ্যমে যদি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
সুতরাং, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন বিদাত কিনা তা নির্ভর করে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কী করা হয় তার উপর। যদি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে। কিন্তু যদি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়, তাহলে তা বিদাত হবে না।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের কিছু সুফল:
এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশের একটি সুযোগ।
এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ।
এটি মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা:
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইসলামের মূল দর্শন ও মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা উচিত নয়।
এই অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজানো, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা উচিত।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন একটি মহৎ কাজ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে পারি।