Show drafts
কুমিল্লার স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা:
কুমিল্লা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। "মুক্তিযুদ্ধের মক্কা" খ্যাত এই জেলাটি ছিল সর্বাত্মক প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। ২৫ মার্চের পর থেকেই কুমিল্লার মানুষ স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠে।
কুমিল্লার অবদান:
প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ: কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য বেশ কিছু শিবির স্থাপন করা হয়েছিল। যেমন, ময়নামতি, বারুদখানি, চৌদ্দগ্রাম, দেবীদ্বার ইত্যাদি। এখান থেকে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা সারা দেশে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
গেরিলা যুদ্ধ: কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সফলভাবে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে। তারা সরবরাহ লাইন বিঘ্নিত করে, যানবাহন আক্রমণ করে, এবং ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে পাকসেনাদের হতাশ করে।
সর্বাত্মক প্রতিরোধ: কুমিল্লার জনগণ সর্বাত্মকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহ করে। তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দাগিরির কাজেও সহায়তা করে।
সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ: কুমিল্লার শিল্পী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গান, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি রচনা করে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নেতৃত্ব: কুমিল্লা মুক্তিযুদ্ধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব প্রদান করেছিল। যেমন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ কামাল আতাতুর্ক, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফজলুর রহমান, বীর বিক্রম খোঁজা মোশাররফ হোসেন, বীর বিক্রম আবদুর রব পটওয়ারী, এবং আরও অনেকে।
কুমিল্লার মুক্তিযুদ্ধের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা:
২৫ মার্চ: স্বাধীনতার ঘোষণার পর কুমিল্লায় ব্যাপক প্রতিবাদ ও মিছিল শুরু হয়।
৩১ মার্চ: ময়নামতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এপ্রিল-মে: পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা ও গণহত্যা।
জুন-জুলাই: সার্বক্ষণিক যুদ্ধ ও গেরিলা যুদ্ধ।
আগস্ট: ভারতীয় সেনাবাহিনীর আগমন এবং যৌথ অভিযান।
১৬ ডিসেম্বর: কুমিল্লা মুক্তি।