Show drafts
কুমিল্লার নামকরণের ইতিহাস: বিতর্ক ও সম্ভাব্য উৎস
কুমিল্লা নামের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। বিভিন্ন মতবাদ ও কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য নীচে তুলে ধরা হল:
১. কমলাঙ্ক থেকে কুমিল্লা:
সবচেয়ে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, কুমিল্লা নামটি "কমলাঙ্ক" শব্দ থেকে এসেছে। সংস্কৃত ভাষায় "কমল" মানে পদ্মফুল এবং "অঙ্ক" মানে চিহ্ন। তাই, অনেকে বিশ্বাস করেন, প্রচুর পদ্মফুলের উপস্থিতির কারণে এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছিল "কমলাঙ্ক"।
ঐতিহাসিক প্রমাণও এই ধারণাকে সমর্থন করে। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং ৭ম শতাব্দীতে এই অঞ্চল পরিদর্শন করেছিলেন এবং তাঁর ভ্রমণবিবরণে "কিয়া-মল-ঙ্কিয়া" নাম উল্লেখ করেছিলেন, যা অনেকে "কমলাঙ্ক" বলে অনুবাদ করেন।
২. কোহমিলা থেকে কুমিল্লা:
আরেকটি মত অনুসারে, কুমিল্লা নামটি "কোহমিলা" শব্দ থেকে এসেছে। ধারণা করা হয়, প্রাচীনকালে এই অঞ্চলে "কোহ" নামক একটি জনগোষ্ঠী বাস করত। তাদের নামানুসারেই এলাকার নামকরণ করা হয়েছিল "কোহমিলা"।
সময়ের সাথে সাথে "কোহমিলা" রূপান্তরিত হয়ে "কুমিল্লা" হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
৩. কুমিল্লা নামক শাসক:
কিংবদন্তি অনুসারে, "কুমিল্লা" নামক একজন শাসক এই অঞ্চলে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর নামানুসারেই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়।
৪. অন্যান্য সম্ভাব্য উৎস:
"কুমিল্লা" নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আরও কিছু ধারণা প্রচলিত আছে।
কেউ কেউ মনে করেন, নামটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ "কুমীল" থেকে, যার অর্থ "কুমির"।
আবার কেউ কেউ মনে করেন, নামটি এসেছে "কুমিল" নামক একটি গ্রামের নাম থেকে।
উপসংহার:
কোন তথ্যটি সঠিক তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। ঐতিহাসিক প্রমাণ ও স্থানীয় কিংবদন্তির ভিত্তিতে বিভিন্ন সম্ভাব্য উৎস ধারণা করা হলেও, "কমলাঙ্ক" থেকে "কুমিল্লা" রূপান্তরই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হয়।