ভূমিকম্প হলো ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পন। এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের ফলে সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:
প্লেট টেকটোনিক্স:
পৃথিবীর ভূত্বক অনেকগুলো ছোট ছোট পাত দ্বারা গঠিত। এই পাতগুলো একে অপরের সাথে ঘর্ষণ ও সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে। এতে শিলায় পীড়ন সৃষ্টি হয়।
প্লেট টেকটোনিক্স হলো পৃথিবীর ভূত্বকের পাতগুলোর চলাচলের একটি তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুসারে, পৃথিবীর ভূত্বক অনেকগুলো ছোট ছোট পাত দ্বারা গঠিত। এই পাতগুলো একে অপরের সাথে ঘর্ষণ ও সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে। এই ঘর্ষণ ও সংঘর্ষের ফলে শিলায় পীড়ন সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন হঠাৎ মুক্তি পেলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
ভূগর্ভস্থ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত:
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূগর্ভস্থ শিলায় পীড়ন সৃষ্টি হয়। আগ্নেয়গিরি হলো পৃথিবীর ভূত্বকের এমন একটি স্থান যেখান থেকে উত্তপ্ত গ্যাস, লাভা ও ছাই বের হয়। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূগর্ভস্থ শিলায় পীড়ন সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন হঠাৎ মুক্তি পেলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
ভূগর্ভস্থ ভূমিধস:
ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরে আঘাতের মাধ্যমে ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে। ভূমিধস হলো ভূপৃষ্ঠের উপরের অংশের অপ্রত্যাশিত ও দ্রুতগতিসম্পন্ন পতনের ঘটনা। ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরে আঘাতের মাধ্যমে ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে।
ভূমিকম্পের প্রকারভেদ
ভূমিকম্পের প্রকারভেদ নির্ভর করে এর উৎপত্তির কারণ, তীব্রতা, ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইত্যাদির উপর। ভূমিকম্পের কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ হলো:
প্লেট টেকটোনিক ভূমিকম্প:
এই ধরনের ভূমিকম্প পৃথিবীর ভূত্বকের প্লেটগুলোর সংঘর্ষ বা বিচ্ছিন্নতার ফলে সৃষ্টি হয়। এগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর ভূমিকম্প।
প্লেট টেকটোনিক ভূমিকম্পের কারণ হলো পৃথিবীর ভূত্বকের পাতগুলোর সংঘর্ষ বা বিচ্ছিন্নতা। যখন দুটি পাত একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তখন তাদের মধ্যে থাকা শিলায় প্রচণ্ড পীড়ন সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন হঠাৎ মুক্তি পেলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। প্লেট টেকটোনিক ভূমিকম্প সাধারণত খুবই শক্তিশালী হয়। এগুলোর তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৭ বা তার বেশি হতে পারে। প্লেট টেকটোনিক ভূমিকম্পের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
আগ্নেয়গিরির ভূমিকম্প:
এই ধরনের ভূমিকম্প আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয়। এগুলো সাধারণত প্লেট টেকটোনিক ভূমিকম্পের তুলনায় কম ক্ষতিকর।
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূগর্ভস্থ শিলায় পীড়ন সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন হঠাৎ মুক্তি পেলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। আগ্নেয়গিরির ভূমিকম্প সাধারণত কম শক্তিশালী হয়। এগুলোর তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৭ এর কম হয়। আগ্নেয়গিরির ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।
ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ভূমিকম্প:
এই ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ফলে সৃষ্টি হয়। ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরে আঘাতের মাধ্যমে ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরনের ভূমিকম্প সাধারণত কম শক্তিশালী হয়। এগুলোর তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৬ এর কম হয়। ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।
ভূমিকম্পের প্রভাব
ভূমিকম্পের প্রভাব ভূমিকম্পের তীব্রতা, ভূমিকম্পের কেন্দ্রের অবস্থান, ভূমিকম্পের সময় ভূপৃষ্ঠের গঠন ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। ভূমিকম্পের প্রভাবগুলি হলো:
ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়
ভূমিকম্প থেকে বাঁচার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা জরুরি:
ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুতি
ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুতি নিলে ভূমিকম্পের সময় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুতির জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা জরুরি:
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি নিলে ভূমিকম্পের সময় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।